জাতীয় দলে মুমিনুল হকের পরিচয় ‘টেস্ট স্পেশালিস্ট’ ব্যাটসম্যান হিসেবে। চার বছর ধরে সাদা পোশাকে টাইগারদের টপ অর্ডারে আস্থার প্রতীক ২৫ বছর বয়সী এ বাঁহাতি। কিন্তু সাম্প্রতিক বাজে পারফরম্যান্স তাকে ছিটকে ফেলেছে একাদশের বাইরে। সর্বশেষ মার্চে কলম্বো টেস্টে দর্শকের কাতারে বসেছিলেন মুমিনুল।
সে সময় তাকে ছাড়াই শততম টেস্ট ম্যাচ জেতে বাংলাদেশ। সেই দুঃসহ স্মৃতি ভুলে আবার দলে জায়গা ফিরে পাওয়ার চ্যালেঞ্জ মুমিনুলের। আর তাই আসন্ন অস্ট্রেলিয়া সিরিজে সুযোগ পেলে ধারাবাহিক পারফর্ম করতে চান তিনি।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে গতকাল অনুশীলন শেষে মুমিনুল বলেন, ‘সবসময় একই গ্রাফ ধরে রাখা সম্ভব নয়। ক্যারিয়ারে কখনো ভালো, কখনো খারাপ সময় যায়। এটা শুধু আমার না, বিশ্বের সব বড় ব্যাটসম্যানেরও হয়। একটা সময় গ্রাফ নিচে নামবেই। সেই সময়টা কাটিয়ে উঠতে হয়। যদি কাটিয়ে উঠে আবার ভালো খেলতে পারেন, সেটিই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আশা করছি, আমি কাটিয়ে উঠতে পারব।’
টেস্ট অভিষেকেই ব্যাট হাতে আলো ছড়িয়েছেন মুমিনুল। ২০১৩ সালে গলে শ্রীলংকার বিপক্ষে খেলতে নেমে করেন ৫৫ রান। পরের ছয় টেস্টে তিন সেঞ্চুরি ও দুই হাফ সেঞ্চুরি। এর পর ১৩ টেস্টে আরেকটি সেঞ্চুরি ও আটটি হাফ সেঞ্চুরি। ব্যাট হাতে এমন বর্ণাঢ্য যিনি, সেই মুমিনুলই কিনা শেষ চার ইনিংসে দুই অংকের ঘর স্পর্শ করেছেন কেবল দুবার! যার মধ্যে সর্বোচ্চ ২৭ রান। ব্যাটিংয়ে যে ছন্দপতন ঘটেছে, সেটা একবাক্যেই মানছেন মুমিনুল।
তবে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত প্রস্তুতি ম্যাচে আবার রানে ফেরায় আশায় বুক বাঁধছেন তিনি। তিনদিনের সেই প্রস্তুতি ম্যাচে ৭৩ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন তিনি, ‘অবশ্যই রানে ফিরতে পারে ভালো লাগছে। কিন্তু ১০০ করতে পারলে আরো ভালো লাগত। এ নিয়ে কিছুটা আক্ষেপও আছে। এসব জায়গায় আউট না হওয়া ভালো। বড় ইনিংস খেলতে পারলে নিজের জন্য ভালো, দলের জন্য ভালো। পরবর্তীতে সুযোগ পেলে এটা কাটিয়ে ওঠা উচিত।’
তবে ৭৩ রানের ইনিংসটি একাদশে জায়গা ফিরে পাওয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট কিনা, তাতে নিশ্চিত নন মুমিনুল নিজেও। সেটি নিয়ে ভাবতেও চান না। আপাতত কাজে লাগাতে চান পরের সুযোগ। এ প্রসঙ্গে তার ভাষ্য, ‘ওভাবে চিন্তা করিনি। অনুশীলন করছি। কাজ যেসব করা দরকার করছি। খেলব কি খেলব না, সেটা টিম ম্যানেজমেন্টের ব্যাপার। আমার হাতে নেই। আমার হাতে যা আছে, চেষ্টা করছি। আরো একটি প্রস্তুতি ম্যাচ আছে। যেন আরো ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি, সেই চেষ্টা করছি।’
মুমিনুল উইকেট নিয়ে ভাবছেন না, ‘আমি জানি না উইকেট স্পিন নাকি ফ্ল্যাট হবে। আমার নিজের ওপর চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। উইকেট যেমনই হোক নিজের জন্য ও দলের জন্য ভালো খেলতে হবে। পুরনো বল ও নতুন বলে ব্যাটিং করছি, মেশিনে ব্যাটিং করছি। আলাদাভাবে করছি, কেননা অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্বসেরা পেস-স্পিন দুটোই আছে।’
পাঠকের মতামত